স্কুল-কলেজের ক্লাস চালুর পরিকল্পনা তৈরি

স্কুল-কলেজের ক্লাস চালুর পরিকল্পনা তৈরি

স্কুল-কলেজের  ক্লাস চালুর পরিকল্পনা
শ্রেণী কক্ষ


করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন সরকার।


প্রাথমিক শিক্ষা স্তর থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তর পর্যন্ত অন্তত সাড়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী দশ মাস ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাসরুমে পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয়।



এতেকরে  শিক্ষার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন সরকারসহ শিক্ষাবিদরা।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সরকার বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে স্কুল ও কলেজপড়ূয়া সব শিক্ষার্থীকে উপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করেছে। 




স্কুল-কলেজের  ক্লাস চালু হচ্ছে
স্কুলে ক্লাস

এ অবস্থায় নতুন শ্রেণির পাঠ শুরুর পাশাপাশি গত বছরের ক্লাসের ঘাটতিগুলো কিছুটা হলেও পুরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো দ্রুত পড়ানো শুরু করার তাগিদ অনুভব করছেন সরকার।



গতবছরের মতোই নতুন শিক্ষাবর্ষেও এলোমেলো হয়ে গেছে শিক্ষাপঞ্জি।
রাজধানীর কিছু নামিদামি স্কুল এরই মধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাসও অনলাইনে নেওয়া শুরু করেছে।



কখন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হবে, তা নিশ্চিত না হলেও আগামী মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।


আর এজন্য মার্চ থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস ম্যাপিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে-মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)কে।


স্কুল-কলেজের  ক্লাস চালুর পরিকল্পনা হচ্ছে
শিক্ষামন্ত্রী 



গত ২৯ ডিসেম্বর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন,
২০২১ সালে মাধ্যমিক ও সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির জন্য সীমিত আকারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।


এর মাধ্যমে ক্লাসরুমে বসিয়ে শিক্ষার্থীদের অসমাপ্ত সিলেবাস শেষ করে একটি প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেওয়া হবে। 



তার মধ্যে এ দুই স্তরের পরীক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা হবে।  আগামী জুন মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।




এভাবে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার্থীদেরও সীমিত পরিসরে ক্লাসে ফিরিয়ে এনে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হবে। 



উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্যও এনসিটিবি সিলেবাস কিছুটা হলে শটকাট করছে। জুলাই বা আগস্ট মাসে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি।




তিনি বলেন, গত মার্চ মাস থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না। 


শিখন ফল অর্জন নিশ্চিত করতে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সীমিত পরিসরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে এনে ক্লাস করানো হবে।



এ জন্যে একটি পরিমার্জিত সিলেবাস তৈরি করছে এনসিটিবি। 


এই  সিলেবাসের উপরও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।



শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আশা করছি ১৫ জানুয়ারি মধ্যে মাধ্যমিকের পরিমার্জিত সিলেবাস ও ৩১ জানুয়ারির মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের পরিমার্জিত সিলেবাস শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হবে।



শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওই সূত্র জানায়, সরকার মূলত করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরুর জন্য অপেক্ষা করছে। 



আশা করা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।



মার্চ থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। মাধ্যমিক স্তরে একসঙ্গে সব শ্রেণির পাঠদান শুরু না করে প্রথমেই ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সরাসরি শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।




এর পরই শুরু হবে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠদান। তারপর একটি দুটি করে অন্যান্য শ্রেণির পাঠদানও শুরু করা হবে।



রাজধানীর বড় ও খ্যাতনামা স্কুলগুলো, যাদের এক শ্রেণিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪০ জনের বেশি, তাদের দুইভাগে ভাগ করে এক দিন পর এক দিন ক্লাস নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।




আবার বাড়ছে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। এদিকে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি যথারীতি বাড়ানো হচ্ছে।



করোনা পরিস্থিতির কারণে সারাদেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দফায় দফায় বাড়িয়ে  ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা  আছে। 


তবে ১৭ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলেন জানান শিক্ষামন্ত্রণালয়।




এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, করোনার পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক না হওয়ায় বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আবার বাড়ানো হতে পারে।




প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লেও প্রাথমিক শিক্ষায় অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম চলতে থাকবে।




মাউশি অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তারা বলেন, এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। 


স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার মতো কোনোই অবস্থা এখনো হয়নি ।

এই পরিস্থিতিতে ১৬ জানুয়ারির পর আবারও ছুটি বাড়ানো হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি সরকারপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে কতদিন ছুটি বাড়ানো যায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি জানান।


সর্বদিক  বিবেচনা করে হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরো  ১৫ দিন থেকে এক মাস  পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
দু-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া  হবে বলে  তিনি জানান।



শিক্ষা সম্পর্কিত আরো কয়েকটি পোস্টঃ-






Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন