ক্যালেন্ডারের পাতার দিকে তাকালে দেখা যাবে বাংলাদেশে সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে আষাঢ় মাস বা বর্ষাকাল। যদিও এই বছরের মে মাস থেকেই বেশ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
জুন মাস থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে।বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু থাকলেও যেসব ঋতু সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়, তার একটি নাম হলো বর্ষা। কৃষির জন্য এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু এই বছরের বর্ষাকাল কেমন হতে যাচ্ছে?
আবহাওয়ার পূর্বাভাসঃ-
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০২১ সালের দক্ষিণ এশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলছেন, ''আমরা ধারণা করছি, এল নিনো এবং লা নিনা যদি নিউট্রাল অবস্থায় থাকে, তাহলে এই বছরে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় মৌসুমী বাতাস স্বাভাবিক অবস্থানে থাকায় বাংলাদেশে বৃষ্টিপাতও স্বাভাবিক মাত্রায় থাকবে।''
''তবে রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টিপাতের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু কম থাকতে পারে। অন্যান্য অঞ্চলে স্বাভাবিক থাকবে বলেই আমরা ধারণা করছি।''
ড. মল্লিক বলছেন, ''আমাদের এই এলাকার বর্ষাকালে দেখা যায়, এক বছরের সঙ্গে আরেক বছরের বর্ষার মিল দেখা যায় না।
প্রতি বছরের বর্ষাকাল বলা যেতে পারে ইউনিক বা অন্য সময়ের চেয়ে আলাদা হয়ে থাকে।''
পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে চট্টগ্রাম অঞ্চলে, আর সবচেয়ে কম হতে পারে খুলনা বিভাগে।
নিম্নচাপ ও লঘুচাপের সম্ভাবনাঃ-
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জুলাই মাসে অন্তত দু'টি লঘুচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে সেই সময়ে টানা কয়েকটি বজ্রপাতসহ ও প্রবল বৃষ্টিপাত হবে।
এই দু'টি লঘুচাপের অন্তত একটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এর মধ্যেই জুন মাসের ১১ তারিখে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়ে সারা দেশে বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছে।
জুনের শেষ দিকে আরেকটি লঘুচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা কি হতে পারে?ঃ-
প্রবল বৃষ্টিপাত হলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়।
বিশেষ করে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হাওর এলাকাসহ উত্তরবঙ্গের অনেক এলাকা তলিয়ে যায়।
তবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, নেপালে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, মেঘালয় ও আসামে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে উজান থেকে ঢল নেমে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা আপাতত করা হচ্ছে না।
২০১৯ সালে বাঁধ ভেঙে কয়েকটি এলাকায় নদীর পানি ঢুকে বন্যা দেখা দিয়েছিল।
বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ১৩ জুনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়া দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।
ফলে সেসব এলাকার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আকস্মিক বন্যার তৈরি হতে পারে।
এই কেন্দ্র যে ১০১টি নদীর পানি পর্যবেক্ষণ করেছে, তার মধ্যে ৫৮টির পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলছেন, অনেক সময় জুন-জুলাই মাসে উজানে ভারী বৃষ্টিপাত হলে উত্তরের কিছু জেলায় বন্যা দেখা দিতে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত আমরা বড় ধরনের কোন বন্যার আশঙ্কা করছি না।
এ সাইটে আরো কিছু আর্টিকেল পড়ুন।
শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে।
সামনের দিনে মহাবিপদ অপেক্ষা করছে।
বাংলাদেশী ছয়টি পণ্য বিশ্বে স্বীকৃতি পাচ্ছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন