ত্রিফলা=আমলকী,হরিতকী ও বহেড়া।পৃথিবীতে উদ্ভিদ জগতে বহু উদ্ভিদ রয়েছে, তা মানুষের মঙ্গলের জন্য জন্ম হয়েছে। তার মধ্যে বহুগুন সমৃদ্ধ ফল হলো ত্রিফলা। তিনটি ফলের সমাহারকে ভেষজ ভাষায় বলা হয় ত্রিফলা।
আর ত্রিফলার ফলগুলো হলো-আমলকী,হরিতকী ও বহেড়া। এর আগে আমলকী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আজকে বহেড়া সম্পর্কে আলোচনা করবো।
বহেড়া
বহেড়া সম্পর্কে কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য নিম্নরুপ-
বাংলা নাম------বহেড়া
ভেষজ নাম---------ত্রিফলার এক ফল
ইংরেজি নাম-------bahera/beleric/bastard myrobalan
বৈজ্ঞানিক নাম----------Terminalia bellirica
প্রজাতি---------Terminalia bellirica
গণ----------Terminalia
পরিবার---------combretaceae
বর্গ-----------myrtales
শ্রেণী----------magnoliopsida
বিভাগ---------Tracheophyta
জগৎ--------plantae.
বহেড়ার স্বাস্থ্য গুন
বহেড়ার স্বাস্থ্য গুন সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্যাবলী নিচে দেওয়া হলো-
১।কৃমি নাশ-
বহেড়ার বীজের বীচি বাদ দিয়ে শাঁসগুলো গুঁড়া করে দিনে ২ বার তিন দিন খেলে সকল প্রকার কৃমি ধ্বংশ হয়।
২।শরীরে ব্যথা বা ফুলা-
মানব শরীরের কোন অংশ বা স্থান ব্যথায় ফুলে গেলে বহেড়ার বীজের শাঁস গুড়া করে কোন কাপড় দিয়ে মোড়িয়ে গরম করে ব্যথা স্থানটিতে স্যাঁক দিলে ব্যথা কমিয়ে ফুলা কমাতে সাহায়্য করে।
৩। অকালে টাকপড়া-
অনেক সময় যুবক বয়সে মাথার চুল সব পড়ে গিয়ে মাথা পুরাটাই টাক মাথা হয়ে যায়।
বহেড়ার ফল লতা পাতা ও গাছের ছাল দিয়ে তেল পাক করে দিনে অনন্ত ২ বার ব্যবহার করলে টাকওয়ালা মাথায় নতুন চুল গজাবে।
৪। ধবল বা শ্বেতী নিরাময়
বহেড়ার তেল আক্রান্ত স্থানে নিয়মিত গোসলের পর ব্যবহার করলে স ধবল রেগটি ভালো হয়।
৫। যৌন দুর্বলতা
বহেড়ার ফল বাদে শাঁসগুলো গুড়ার করে নিয়মিত দুইবার সকাল ও রাতে খেলে যৌন দুর্বলতা কমিয়ে সবল রাখে এই বহেড়া।
৬। মেহ-প্রমেহ উপসম
মহিলা বা পুরুষদের এই সমস্যায় আমরা অনেকে ভুগি।পেসাবের আগে বা পরে ভাতের মাড়ের মতো সাদা স্পাম পড়ে, একে বলে মেহ বা প্রমেহ।
বহেড়ার বীচির গুড়া খাটি মধুর সাথে দুই বা তিন বেলা নিয়মিত খেলে এই রোগ ভালো হয়।
৭। অকালে চুল পাকা
বিভিন্ন কারণে আমাদের মাথার চুল পাকতে শুরু করে।বহেড়ার গুড়া নিয়মিত খেলে চুল পাকা বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল করে ঘন কালো ও মসৃণ।
৮। পেসাবে জ্বালা-পোড়া
বহেড়ার বীচির শাঁস বাদে গুঁড়া নিয়মিত খেলে পেসারের জ্বালা পোড়া বা যন্ত্রণা কমে যায়।
৯। আমাশয়ে উপকার
যেকোন ধরণের আমাশয়,যেমন সাদা আম ও রক্ত আম বা পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া বা কলেরায় নিয়মিত সেবনে যথেষ্ট উপকার করে এই বহেড়া।
১০।সর্দ্দি ও কাশির উপকার
সর্দ্দি ও কাশি হলে বহেড়ার বীচি শাঁস বাদে গুঁড়া করে দিনে দুইবার নিয়মিত খেলে সর্দ্দি কাশি ও সামান্য জ্বর ভালো হয়ে যায়।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায়, ত্রিফলার বহেড়ার যে এতো গুন তার সম্পর্কে আমরা পুর্বে জানি না। আর এসব গাছগাছগার কোন প্রকার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। বহেড়া যেকোন ভেষজ বা কবিরাজি দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ছাদবাগানের টবে বহেড়ার চাষাবাদ সম্পর্কে আলোচনা করা যাবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন