স্কুল-কলেজ খোলা |
দেশের সব স্কুল-কলেজ ৩০ মার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ মে-তে খুলে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। গত শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর তিনি এ তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, গত এক বছর ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এ বছর ছুটি কিছুটা কমানো হবে।
সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর ছুটি ছিল আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি রোববার পর্যন্ত। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ খোলা হবে কি না এবং সেই পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কি না।
তা পর্যালোচনা করার জন্য গত শনিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়। সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। সেখানে এই সিদ্ধান্ত হয়।
প্রাথমিক শিক্ষাঃ-
তিনি বলেন, প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণিকে প্রতিদিন ক্লাসে আনা হবে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাসে আনাবো। আর বাকি শ্রেণির ক্লাসগুলো প্রথমে সপ্তাহে একদিন করে হবে। তার কয়েকদিন পরে সপ্তাহে দু’দিন করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনানো হবে।
এইভাবে পর্যায়ক্রমে স্বাভাবিকের দিকে আমরা নিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। তবে আপাতত প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাস শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী ডঃ দীপু মনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যেই পরিষ্কার-পরিছন্ন করাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আর আমাদের শিক্ষক ও কর্মচারিদের টিকা দেওয়ার যে বিষয়টি, সেটি ৩০ মার্চের আগেই সম্পন্ন করা হবে।
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্যঃ-
তাছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মেরামতের প্রয়োজন হলে সেটিও ৩০ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এসএসসির জন্য ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসির জন্য ৮০ কর্মদিবসের একটি সিলেবাস প্রণয়ন করেছি।
এসএসসি শিক্ষার্থীদের ৬০ কর্মদিবস এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ৮০ কর্মদিবস ক্লাস করিয়ে আমরা পরীক্ষা নেবো।
এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি আমরা ৩০ মার্চে খুলতে পারি অথবা তার পরে খুলতে হয়।
তাহলে তার পরবর্তী ৬০ কর্মদিবস ক্লাস করিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নেবো। একইভাবে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ৮০ কর্মদিবস ক্লাস করিয়ে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলাঃ-
গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ পর্যালোচনা করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিন শিক্ষামন্ত্রী জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে ঈদের পর ২৪ মে থেকে।
শিক্ষামন্ত্রী |
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রোজার সময় পুরো সময়ে ছুটি থাকবে না। এমনিতেই অনেক সময় চলে গেছে। আমরাও ছোটবেলায় দেখেছি শুধু ঈদের সময় ছুটি থাকতো।
বিশ্ববিদ্যালয় হল খোলাঃ-
ঐ সোমবারের বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান,
দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলবে আগামী ১৭ মে।
তিনি বলেন, ঈদের পর আগামী ২৪ মে থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ১৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুেলো খুলে দেওয়া হবে।
সেই সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডঃ দীপু মনি বলেন, আজ আমি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি।
সারা বিশ্বে অনলাইনের মাধ্যমে পাঠদান করার চেষ্টা করেছে। আমরাও অনলাইনে পাঠদান চালিয়ে গেছি। কিছু সমস্যার কারণে সবাই অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনঃ-
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ করে শুরু হয় অস্থিরতা। হলগুলো খুলে দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন থেকেই আন্দোলন করে আসছিল।
এমনকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলে তালা ভেঙে শিক্ষার্তীরা ভেতরে প্রবেশ করার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও হলের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীরা।
তাছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েও হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন দুপুরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন শিক্ষামন্ত্রী ডঃ দীপু মনি।
করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দীর্ঘ এক বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তার পুর্বে গত ২২ জানুয়ারি করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে গাইডলাইন প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
স্কুল-কলেজগুলোতে ৩৯ পাতার গাইডলাইন পাঠিয়ে বলা হয়, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুলগুলো প্রস্তুত করে রাখতে, যাতে যে কোনো মুহূর্তে সেগুলো খুলে দেয়া যেতে পারে।
৬ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকঃ-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে ৬ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ছয় মন্ত্রণালয়ের বৈঠক গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পাঁচজন মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী এবং একজন উপমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষা সম্পর্কে আরো কিছু পোস্টঃ-
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ইএফটি প্রাথমিক ধারণা ফরম পুরণ ও নির্দেশাবলী।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২০ ফলাফল ও পুনঃমুল্যায়নের আবেন।
দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ও অন্যান্যদের সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন