এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের ভাগ্যে কি আছে?

এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের ভাগ্যে কি আছে?

এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের ভাগ্যে কি আছে?

এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের


এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের ভাগ্যে কি আছে এই সমস্যা বাংলাদেশে অনেক দিনের সমস্যা। এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি চক্রের নিয়োগ সম্পন্ন না করেই একের পর এক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করছেন।


সনদ দিয়ে জটিলতা তৈরি করে বিপাকে পড়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ।

হাজার হাজার নিবন্ধনধারী নিয়োগের অপেক্ষায় থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর পার করেছেন। সঠিক কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি এই কর্তৃপক্ষ।


মামলাঃ-

এমনকি আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করে আপিল করে সেই মামলাতেও হেরেছে এনটিআরসিএ।
তাছাড়া বিধি না মেনে ১২তম নিবন্ধন প্রার্থীদের নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। 


যদিও পরে তা সংশোধন করা হয়। এমতাবস্থায়  সনদধারী প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছে এনটিআরসিএ কতৃপক্ষ।



উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে ২০১৭ইং সালে নিয়োগ বঞ্চিত প্রথম থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৭ হাজার ২৩৪ জনকে নিয়োগ দিতে হবে। আবার ১৩তম থেকে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আরও ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।


দ্বিতীয় নিয়োগঃ-

দ্বিতীয় নিয়োগ চক্রের সুপারিশ করা এক হাজার ২৮৪ জনের। কিন্তু বর্তমানে শূন্যপদ রয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে এখন বেকায়দায় পড়েছে এনটিআরসিএ কতৃপক্ষ।




প্রথম থেকে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেছেন মোট ৬ লাখ ৪ হাজার ৬৮৫ জন। এই তালিকা থেকে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় ৩৬ হাজার জনকে।



দেশের বিভিন্ন বেসরকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মোট ৩৮ হাজার ৮০০ জন শিক্ষকের তালিকা পাঠানো হয়।





তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিঃ-

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি জারির ঠিক  পুর্বমুহূর্তে নিয়োগ পেতে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনে চাকরী বঞ্চিত ২ হাজার ২০০ জন হাইকোর্টে মামলা করেন। এরপর আর গণবিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি।



বন্ধ থাকে শিক্ষক নিয়োগ। ২০১৭ সালে নিয়োগ বঞ্চিতদের ১৫ দিনের মধ্যে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, মূলত হাইকোর্টের আগের রায় বাস্তবায়ন না করায় আদালত অবমাননার মামলার শুনানিতে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।





হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞাঃ-

গেল বছর ১৫ ডিসেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের -এনটিআরসিএ  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।


এই সময়ে আদালত অবমাননার বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনও শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি দিতে পারবে না বলেও আদেশ দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট একটি রায় দেন।


সেই রায়ে কয়েক দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। তার মধ্যে সম্মিলিত মেধা তালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারী এবং অন্যান্য আবেদনকারীদের নামে সনদ জারি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নিবন্ধনধারীদের মধ্যে ১৭ হাজার ২৩৪ জন রিট করেছিলেন।


রিটকারী পক্ষের সনদধারী মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘১৭ হাজার ২৩৪ জন নিবন্ধনধারী রিট করেছিলাম। আমরা ২০১৭ সালের নিয়োগ বঞ্চিত।

দীর্ঘদিন  হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ৭ থেকে ৮ হাজার প্রার্থী রয়েছেন এখনও নিয়োগের অপেক্ষায়।
অন্যরা বিভিন্ন চাকরিতে চলে গেছেন। আর বর্তমানে শূন্যপদ রয়েছে ৫০ হাজার।


ফলে সামান্য এই প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে কোনও সমস্যা হবে না। ’রিটকারীরা জানান, তাদের বেশিরভাগ প্রার্থীদের বয়স ৩৫ বছর পার হয়ে গেছে। আদালতের রায় মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নিয়োগ সম্পন্ন করা উচিত হবে।


নিয়োগ সুপারিশঃ-

নিয়োগ বঞ্চিত পরিতোষ চন্দ্র হালদার বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে ১৭ হাজার ২৩৪ শিক্ষককে নিয়োগের সুপারিশ সম্পন্ন করতে হবে।


তাছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষায় যেসব প্রার্থীদের বয়স ৩৫ বছর পর হয়ে গেছে তাদের জন্য আবেদন চাইতে হবে। আবেদনের পর দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথম থেকে ১২তম নিয়োগ চক্র পর্যন্ত বিধি ভঙ্গ করে এনটিআরসিএ।



বিধি অনুযায়ী শূন্য পদের বিপরীতে ২০ শতাংশ প্রার্থীকে পাস করিয়ে সনদ দেওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত প্রার্থীদের পাস করিয়ে সনদ দেওয়া হয়েছে।


এতেকরে  হাজার হাজার নিবন্ধনকারীর বয়স ৩৫ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেননি। নিবন্ধনধারীরা মামলা করলে আদালতের নির্দেশনায় নিয়ম মেনে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রার্থীদের ২০ শতাংশ অতিরিক্ত রেখে সনদ দেওয়ার ব্যবস্থা নেয়।


এখন ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা সনদ পেয়েছেন। আর ১৬তম নিবদ্ধনের মৌখিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে বলে জানান এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক ফিরোজ আহমেদ। ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনে চাকরিবঞ্চিত ২ হাজার ২০০ জন চাকরি না পেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন। এছাড়া ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ১৮ হাজার ৩১২ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।




১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ১১ হাজার ১৩০ জন। ১৬তম ২২ হাজার ৩৯৮ জন প্রার্থী। ১৬তম নিবন্ধন প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা চলমান রয়েছে।প্রথম নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে ১২তম নিবন্ধন পরীক্ষায় চাকরি না পাওয়া প্রার্থীরা ২০টি মামলা করেন  বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।




এই মামলায় ৩৫ বছরের বেশি বয়সী সনদধারীদের নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৯ সালের ২২ মে হাইকোর্ট ৩৫ বছর বেশি বয়সী সনদধারীদের নিয়োগের নির্দেশ দেন।


পরে আপিলে (২০২০ সালের ১১ অক্টোবর) হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। আর পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ হয় এ বছর ৯ ফেব্রুয়ারি।

এনটিআরসিএ’র বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয় বিভিন্ন কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে প্রায় ৩০০টি।



আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।



শিক্ষা সম্পর্কে আরো কিছু পোস্টঃ-


এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ইএফটি প্রাথমিক ধারণা ফরম পুরণ ও নির্দেশনা।


এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২০ ফলাফল ও পুনঃমুল্যায়নের আবেন।


দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ও অন্যান্যদের সপ্তাহে একদিন করে  ক্লাস।



উপসংহারঃ-

এনটিআরসিএ এর অধীনে নিবন্ধনধারীদের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র  চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেবে বর্তমানে ৫৭ হাজার ৫০৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া যাবে।

তন্মধ্যে ১ হাজার ১ হাজার ২৮৪টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কয়েকজনের সমস্যা ছিল তাদের আবেদনের জন্য সময় দেওয়া আছে। গণবিজ্ঞপ্তির জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। অনেক কাজ রয়েছে, সে কারণে কবে গণবিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া হবে তা এখনই বলতে পারছি না বলে তিনি জানান।



Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন